২০১৯ সালের সেরা ১০টি হরর সিনেমা

ভূতে যতই ভয় থাকুক না কেন, ভয়ের সিনেমার প্রতি আগ্রহ থাকে সবারই। একলা অন্ধকারে দম বন্ধ করা ভূতের সিনেমা দেখার পর রাতে খাটের পাশে কারোর উপস্থিতি কিন্তু মনে হতেই পারে। যারা ভয় ভালবাসেন বা হরর মুভির ফ্যান তাদের জন্য ২০১৯ সালটা ছিল চমৎকার একটি বছর। আপনি ভয় পান বা না পান কিন্তু দেখে নিতে পারেন এ বছরের সাড়া জাগানো রোমাঞ্চকর এই ছবিগুলো। আজকের এই লেখাটিতে আমি কাউন্টডাউনের শেষে এ বছরের সেরা ভৌতিক মুভিটির সাথে পরিচয় করিয়ে দেব। তার আগে বলে নিচ্ছি এই লিস্টের সবগুলো মুভি দর্শক জনপ্রিয়তার উপর ভিত্তি করে র‍্যাংক করা হয়েছে। 

10) Pet Sematary 
 থ্রিলার ও অজানা ভয়ঙ্গকর গল্পের পেছনে এক অনন্য নাম হলেন স্টিভেন কিং। হরর রেনেসাঁর এই সময় তার প্রচুর রচনাগুলিকে  হরর মুভিতে রূপান্তর করতে দেখা গেছে। জেরাল্ডস গেম, দ্য টল গ্রাস নেটফ্লিক্সের মাধ্যমে শ্রোতাদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে ওঠার পরপরই পেট সিমেটারি সম্পুর্ণভাবে মুক্তি পায়। কেভিন কলস এবং ডেনিস উইডমায়ার পরিচালিত, পেট সিমেটারি মুভিটি হরর লাভারদের জন্য আধুনিক বিশ্বে নিয়ে এসেছে এক নতুন মাত্রা। পেট সিমেট্রি ছবিটিতে অভিনয় করেছেন জেসুন ক্লার্ক, এমি সেইমেটজ ও জন লিথ্গো প্রমুখ। ছবির কাহিনীতে দেখা যায় ড. লুইস ক্রিড ও তার স্ত্রী রেচেল তাদের দুই সন্তানকে নিয়ে বোস্টন থেকে গ্রামে স’ানান্তরিত হয়। অচিরেই এই দম্পতি আবিষ্কার করেন তাদের বাসার পাশেই রহস্যময় একটি সমাধিস’ল লুকানো আছে। এই রহস্যে ঘেরা সমাধিস’লকে ঘিরেই চলতে থাকে একের পর এক ভয়ংকর ঘটনাবলি।
 



09) Crawl
ক্রল সিনামকে একটা ক্লাসিক মনস্টার মুভিও বলা চলে যেটি পরিচালনা করেছেন আলেকজান্ডার আযা। ছবিটিতে কায়া স্কোডেলারিও এবং ব্যারি মরিচকে কন্যা ও পিতার চরিত্রে অভিনয় করতে দেখা যায়। যারা সমুদ্র থেকে উৎপত্তি হওয়া ভয়ানক ঝড় হ্যারিক্যানের কবলে পরে তাদের নিজ বাড়িতে আটকে যায়। ছবিটিতে মূল ভিলেইন হিসেবে থাকে সমুদ্র থেকে উঠে আসা বিশালাকার দানবীয় কুমির। একের পর এক ধারবাহিক ভাবে উত্তেজনাপূর্ণ অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে চলতে থাকে পিতা ও কন্যার সার্বভাইভ করার কাহিনী।
 

08) Brightburn
‘ব্রাইটবার্ন’-এর পরিচালক জেমস গুন। ব্রাইটবার্ন সিনেমার কাহিনীতে দেখা যাবে নিঃসন্তান খামারি দম্পতি টোরি এবং কাইলি। অনেকদিন ধরে সন্তান লাভের চেষ্টা করছেন, কিন্তু হচ্ছে না। এ নিয়ে তারা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। একদিন আচমকা আকাশ থেকে একটি উল্কা এসে পড়ে তাদের খামারের পাশে। দুজন ছুটে গিয়ে দেখেন সেখানে একটি বাচ্চা পড়ে আছে। কয়েক বছর পর ব্র্যান্ডন আবিষ্কার করেন তার মধ্যে অতিমানবীয় শক্তি আছে।
 

07) Ready Or Not
হরর ও কমেডি মিশ্রিত হওয়ায় রেডি অর নট ছিল বছরের আরো একটি লক্ষনীয় ছবি। ছবিটিতে সামারা ওয়েভিংকে একজন নববধূর চরিত্রে অভিনয় করতে দেখা যায় যিনি তার বিবাহের রাতের অনুষ্ঠানের তার স্বামীর পরিবার দ্বারা নিগৃহীত হন। যার কারনে সে তার শশুরবাড়িতে লুকিয়ে থাকতে চায় এবং এক পর্যায়ে তাদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে বাধ্য হন। মার্ক ও'ব্রায়েন অভিনয় করেছেন তার স্বামীর চরিত্রে এবং মার্ক ও'ব্রায়েনের পরিবারের সদস্য হিসাবে অভিনয় করেছেন অ্যাডাম ব্রডি, হেনরি সিজারি এবং অ্যান্ডি ম্যাকডওয়েল। ছবিটা দেখার মুহূর্তে আপনি উপলব্ধী করতে পারবেন এ যেন বিড়াল ও ইদুরের রোমাঞ্চোকর এক খেলা যেটা রানডমলি চলছে ভয় ও সহিংস পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে। 

06) Scary Stories To Tell In The Dark

স্ক্যারি স্টোরিস টু টেল ইন দ্যা ডার্ক হল অ্যালভিন শোয়ার্টজের একই নামের শিশুদের বইয়ের সিরিজ অবলম্বনে আন্ড্রে অ্যাভ্রেডাল পরিচালিত একটি হরর ফিল্ম। এটি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডার একটি আন্তর্জাতিক সহ-প্রযোজনায় নির্মিত। ছবিটি মূলত প্যানসিলভ্যানিয়ার একটি কারখানার শহর মিল ভ্যালির বাস্তব জীবনের ভয়াবহতাকে নিয়ে তৈরী করা হয়েছে, যেখানে একদল কিশোর-কিশোরী একটি পুরানো বই আবিষ্কার করে যেটি ঐ শহরের বাসিন্দাদের জন্য ভয়াবহ পরিনতি নিয়ে আসে।
তারা বইটি চুরি করে আনার পর থেকে, এটি সেই গ্রুপের কিশোর-কিশোরীদের নিয়ে প্রত্যেকের আলাদা আলাদা মারাত্মক ভীতিকর সিরিয়াল রচিত হতে থাকে। তারপর সবার সাথে ঘটতে থাকে একের পর এক ভয়াবহ ঘটনা।
 

05) The  LightHouse
মাত্র দুটি হরর মুভি বানিয়ে পরিচালক রবার্ট এগার্স ইতোমধ্যে নিজেকে নৈপুণ্যের বিশেষজ্ঞ হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। এবং তিনি তার দ্যা লাইটহাউজ মুভিটিকে করেছেন আরো বেশি স্টাইলাইজড ও সিনেম্যাটিক। দ্যা লাইটহাউজ ছবিটিতে অভিনয় করেছেন উইলিয়াম ড্যাফো ও রবার্ট প্যা্টিসন দুইজন ১৯ শতকের বাতিঘর রক্ষক হিসেবে। স্কয়ার আকারের সাদাকালো রিজুলশনের ছবিটি আপনাকে অন্ধরাকাচ্ছন্ন আবদ্ধ ভয়ের অনুভুতি দিবে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে এটি নির্মাতার পূর্ববর্তী ছবি দ্যা উইচ এর চেয়েও ভয়ানক বলে মনে হয়। ছবিটিতে মূলত দুইজন বাতিঘর রক্ষকের বিচক্ষনতার সাথে দূর্গম ও ভয়াবহ পরিস্থিতিকে সামলে ওঠার গল্প চিত্রায়িত হয়েছে।
 

04) Joker
জোকার একটি ২০১৯ সালের আমেরিকান মনোস্তাত্ত্বিক থ্রিলার চলচ্চিত্র। টোড ফিলিপসের পরিচালনায় নির্মিত এ চলচ্চিত্রটির চিত্রনাট্য লিখেছেন পরিচালক এবং স্কট সিলভার। ডিসি কমিক্স চরিত্রের উপর ভিত্তি করে নির্মিত এ চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন জোকার চরিত্রে জোয়াকিন ফিনিক্স। ওয়ার্নার ব্রোস. পিকচার্স পরিবেশিত এ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে ডিসি ব্ল্যাক, তথা ডিসি-ভিত্তিক একক চলচ্চিত্র নির্মাণ শুরু হল। চলচ্চিত্রটি জোকারের উৎপত্তিকে দেখায়। ১৯৮১ সালের পটভূমিতে নির্মিত। এটি ব্যর্থ স্ট্যান্ড-আপ কমেডিয়ান আর্থার ফ্লেককে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে, যে কিনা গোথাম সিটিতে অপরাধের জগৎ নির্মাণ করে। পার্শ্বচরিত্রে আরো অভিনয় করছেন রবার্ট দে নিরো, জেজি বিটজ এবং ফ্রান্সেস কনরয়।
 

03) IT Chapter Two


ছবির গল্পে মূলত ডেরি শহরের ভৌতিক কাহিনী ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। মূল উপন্যাসে সাত শিশুর গল্প বলা হয়েছে। যারা ডেরির ছোট্ট শহর মাইনেতে ২৭ বছর ধরে ভয়ঙ্কর অতিপ্রাকৃত সত্তার সঙ্গে যুদ্ধ করে যাচ্ছে। অতিপ্রাকৃত সে সত্তা শহরের বাসিন্দাদের ভয় দেখায়। এমনকি সে তার আকার, আকৃতি মুহূর্তে পরিবর্তনও করতে পারে। 'ইট' সিনেমায় প্রথমবার পেনিওয়াইজের সঙ্গে সাত শিশুর সাক্ষাৎ হয়। আর এবারের 'ইট চ্যাপ্টার টু'তে সে শিশুরাই বড় হয় এবং তারা তাদের ছেলেবেলার সে ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতারই সম্মুখীন হয়।

১৯৮৬ সালে প্রকাশ পাওয়া স্টিফেন কিংয়ের উপন্যাস 'ইট চ্যাপ্টার টু' নিয়ে সিনেমাটি নির্মাণ করেছেন অ্যান্ডি মুশিয়েটি। প্রথম সিনেমা 'ইট'র পরিচালকও ছিলেন তিনি। এবারের পর্বে অভিনয় করেছেন জেমস ম্যাকাভয়, জেসিকা চ্যাস্টেইন, বিল হ্যাডার, জে রায়ান, অ্যান্ডি বিন প্রমুখ।
 

02) Us
Us হল একটি আমেরিকান হরর ফিল্ম যেটি রচনা ও পরিচালনা করেছেন জর্ডান পিল। ছবিটিতে দেখা যায় স্বামী, পুত্র এবং কন্যার সাথে অ্যাডিলেইড উইলসন সমূদ্রসৈকতের সামনের বাড়িটিতে ফিরে আসেন যেখানে তিনি ছোটবেলায় বেড়ে উঠেছিলেন। অতীত থেকে তিনি একটা খারাপ অভিজ্ঞতায় ভুগছেন, এবং তার সমসময় মনে হচ্ছিল যে সামনে খারাপ কিছু ঘটতে চলেছে। অবশেষে তার এই উদ্বেগ বাস্তবে পরিনত হয় যখন চারটি মুখোশ পরিহীত অপরিচিত ব্যক্তি উইলসনের ঘরের সামনে নেমে এসছিল। তাদের মুখোশ সরানোর পর যখন জানতে পারে এই চার ব্যাক্তি উইলসনের পরিবারের চারজন সদস্যসেরই প্রতিচ্ছবি তখন তারা ভীষণ আতংকিত হয়ে পরেন।
 

01) Midsommar
পরিচালক অ্যারি অ্যাস্টার নির্মিত সিনেমাটির চিত্রনাট্য গড়ে উঠেছে ভৌতিক গল্পকে উপজীব্য করে। কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছেন জ্যাক রেইনর ও ফ্লোরেন্স পাগ। প্রেমিক যুগল ক্রিস্টিয়ান ও ড্যানির গল্পে এগিয়েছে সিনেমার কাহিনী। বিভিন্ন কারণে তাদের সম্পর্কে ঘটে ছন্দপতন। ক্রিস্টিয়ানের মনে হয়, দুজনে একসাথে ভ্রমণে গেলে আসতে পারে ইতিবাচক পরিবর্তন।
এক বন্ধুর নিমন্ত্রণে কয়েকজনকে সাথে নিয়ে সুইডেনের পথে রওনা দেয় এই জুটি।
দীর্ঘ ৯০ বছর পর পর আয়োজিত এক গ্রাম্য উৎসবে অংশ নিতেই মূলত এই ভ্রমণ। সুইডেনে পৌঁছে কিছুটা সময় হই-হুল্লোড়-আনন্দে কাটলেও একটা পর্যায়ে ভৌতিক এবং সহিংস রূপ নেয় উৎসব।
শঙ্কায় পড়ে ক্রিস্টিয়ান-ড্যানির জীবন। এই জুটি কীভাবে বিপদ থেকে উদ্ধার পায় সে গল্পই ফ্রেমবন্দি হয়েছে 'মিডসোমারে'।
সিনেমায় ক্রিস্টিয়ানের চরিত্রে জ্যাক রেইনর এবং ড্যানির ভূমিকায় আছেন ফ্লোরেন্স পাগ। এছাড়াও আছেন উইলিয়াম জ্যাকসন হার্পার, ভিলহেম ব্লুমগ্রেন ও এলোরা টর্চিয়া।